গ্রাম্য আদালত প্রসঙ্গ। - Iqbal Hussein Baltu

 Iqbal Hussein Baltu

ধর্ম দিলো পূর্ণতা, পশু হলো স্বাধীন চেতা।

গ্রাম্য আদালত প্রসঙ্গ।

Share This

  বাংলাদেশের গ্রাম্য সমাজ জীবনে গ্রাম্য আদালত  একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গ্রাম্য সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে গ্রাম্য আদালতের সাথে জড়িত। সেই গ্রাম্য আদালত ন্যায় সঙ্গত না হওয়ার কারণে সমাজজীবনে প্রতিহিংসা ক্রমই বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

  গ্রাম্য বাংলায় যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই গ্রাম্য আদালত আজ হুমকির মুখে বিচারকগণের, অযোগ্য, অদক্ষ,  অল্প বয়স্ক, অনভিজ্ঞ, নেসাগ্রস্ত, অশিক্ষিত, শিক্ষিত হয়েও প্রতিহিংসা পরায়ণ, রাজনীতির প্রভাব, বংশপ্রীতি, ইত্যাদি কারণ। এমনও দেখা যায় বিচারকার্য পরিচালনার সময় তারা সঠিক ভাবে বিচার না করে বাদী বা বিবাদীদের উপর চড়াও হয়ে শারীরিক নির্যাতনও করে থাকে।

   এসকল কারণে গ্রাম্য আদালতের প্রতি মানুষের অাগ্রহ কমে গিয়ে তারা ইউনিয়ন পরিষদ,থানা ও আদলতের দিকে ধাবিত হচ্চে। এই কারণেই মামলা- মকদ্দমার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ঘরে ঘরে মামলা হচ্ছে। পুলিশ হয়রানির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু দুঃখজনক হলোও সত্য কথা গ্রাম্য আদালত এখন অর্থহীন মানুষের শোষণের অন্যতম হাতিয়ার। একটি বেসরকারি জরিপে দেখা গেছে গ্রাম্য আদালতের  ৮০% বিচার ন্যায়সঙ্গত হয় না।

  অথচ এই গ্রাম্য আদালত এক সময়ে ছিলো আদর্শ ন্যায় বিচারের প্রতীক। গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ, গণ্যমান্য বিত্তবান, মসজিদের ইমাম ও মোড়ল - মাতব্বর ইত্যাদি ৫ জন ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে গঠিত হতো গ্রাম্য আদালত। তাদের বিচারে বাদী- বিবাদী উভয় খুশী হতো। সমাজে বিরাজমান থাকতো শান্তি। সমাজে সিগারেট, জুয়া, মদ-গাজা সকল প্রকারের নেশা জাতীয় দ্রব্য প্রকাশ্য বা গোপনে সেবন করার সাহস পেতনা অল্পবয়সী তরুণ যুবকরা। আজ তা বিভীষিকাময় হয়েছে। 

  সংক্ষেপে গ্রাম্য আদালতের প্রতি অনীহার বিদ্যমান কারণ-

  অনভিজ্ঞ :- গ্রাম্য এলাকায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে থাকে এ ধরণের অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের জন্য মানুষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

  অদক্ষ :- গ্রাম্য আদালতের আইন সম্পর্ক যাদের সঠিক জ্ঞান নেই তাদের জন্য ন্যায় বিচার পাই না সাধারণ মানুষ।

  অশিক্ষিত :- অশিক্ষিত, স্বল্প শিক্ষিত, কুসংস্কারাচ্ছন্ন ফলে কুচক্রীদের পরামর্শর জন্য বাদী বা বিবাদীর সত্যটা জানতে অস্বীকৃত জানায়।

  অযোগ্য :- বিচারের সময় সঠিক সমস্যা চিহ্নিত না করে বিচারকার্য শেষ করা। 

  বংশ প্রীতি :- বিচারকগণ বংশ প্রীতি বা এলাকার প্রীতির কারণে মানুষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়।

  রাজনীতি :- দেশের যে দল ক্ষমতা থাকে সে দলের দাপটের কারণে মানুষ ন্যায় বিচার পাই না।

  অর্থনীতি :- যে পক্ষ বিচারকদের টাকা বেশি দেয় রায় তার দিকে চলে যায়। 

  অল্পবয়স:- আজ- কাল দেখা যায় বয়স মাত্র ২৫/৩০ ক্ষমতার দাপটে তার আবার বিচারক হিসেবে বিচার করে। তারা অন্যায় ভাবে তাদের মা - বাবা বয়সী ব্যক্তির উপর হাত তুলতে দ্বিধাবোধ করেনা। 

  আমরা যদি সমস্ত বাধ্য বিঘ্ন অতিক্রমণ করে গ্রাম্য আদালত কার্যকর করতে পারি তবে সাধারণ মানুষ পাবে ন্যায় বিচার। মানুষকে আর থানা বা আদালের দ্বারস্থ হতে হবে না। মানুষের কল্যাণের জন্য হোক আমাদের পথ চলা।

No comments:

Post a Comment

Pages